খুঁজুন
শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ৩০ কার্তিক, ১৪৩২

আওয়ামী দোসর গণপূর্তের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শেখর চন্দ্র বিশ্বাস ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির করেও বহাল তবিয়তে

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: বুধবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:২৯ অপরাহ্ণ
আওয়ামী দোসর গণপূর্তের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শেখর চন্দ্র বিশ্বাস ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির করেও বহাল তবিয়তে
গৃহায়ণ গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন গুরুত্বপূর্ণ অধিদপ্তর গণপূর্ত অধিদফতরে গত ১৬ বছর ধরে গড়ে উঠা লুটপাটের সহযোগী বিগত সরকারের কর্মকর্তাদের বিতাড়িত করার কার্যকর পদক্ষেপ শুরু করেছে সরকার।

কিন্তু মাঝখানে এসে মন্ত্রণালয় থমকে যায় অধিদপ্তরের প্রকৌশলীদের সিন্ডিকেটের হাতে। এখনোও প্রকৌশলী সদস্যদের সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে থাকায় তাদেরকে বদলি করতে পাছেন না অধিদপ্তর বা মন্ত্রণালয়। তারা এখনও বহাল তবিয়তে অফিস করছেন। কেউ বা বছরের পর বছর পোস্টিং ঢাকায়। তাও বা গুরুত্বপূর্ণ সার্কেলে দায়িত্ব পালন করছেন। কেউ বা ঘুরেফিরেই আবার ঢাকায় বদলি হচ্ছেন।

গণপূর্তের সাবেক মন্ত্রী/ সচিব এবং প্রকৌশলীদের নামেও একাধিক মামলা হয়েছে। সেই সাবেক মন্ত্রী/ সচিব এবং প্রকৌশলীদের আস্থাভাজনরা এখনও অধিদপ্তর/ সার্কেলে আরাম আয়েশে অফিস করছেন। সাবেক বর্তমান প্রধান প্রকৌশলীদের শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরি করে গেছে। নিয়োগ বানিজ্য, বদলী বানিজ্য, টেন্ডার বানিজ্য করে শত শত কোটি টাকা আয় করেছেন তাঁরা।

গণপূর্ত অধিদপ্তরে যে কয়েকজন প্রভাবশালী তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অনিয়ম ও দূর্নীতি করে নামে বেনামে দেশ ও বিদেশে শত শত কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন শেখর চন্দ্র বিশ্বাস তাদের মধ্যে একজন। ঘুরে ফিরে ঢাকার এক ডিভিশন থেকে আরেক ডিভিশনে বদলি হন! ঢাকা ছাড়তে হয়নি, এমনকি ঢাকা যেন তাকে ছাড়তেই চাই না।

সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার সলস গ্রামের নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের প্রফুল্ল চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে শেখর চন্দ্র বিশ্বাস। বিসিএস ২৪ তম ব্যাচের এই কর্মকর্তা ২০০৫ সালে চাকরিতে যোগদান করেন। চাকরিতে যোগদানের পর থেকেই নীতিভ্রষ্ঠ হয়ে টাকা ইনকামের নেশায় হয়ে ওঠেন দূর্নীতির বরপুত্র।

অভিযোগ উঠেছে সিরাজগঞ্জের সাবেক প্রভাবশালী সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম ( এইচ টি ইমামের সন্তান শেখ হাসিনার সাবেক রাজনৈতিক উপেদষ্টা) তার নিজ এলাকার সংসদ সদস্য হওয়ায় তার প্রভাব খাঁটিয়ে বাগিয়ে প্রাইজ পোষ্টিং ।

তিনি ২০১৮ সালে নির্বাহী প্রকৌশলী (ই/এম), পিডব্লিউডি ই/এম উড ওয়ার্কশপ বিভাগ, ঢাকা পদে কর্মরত ছিলেন। ২০১৮ সালের একটি সরকারি নথি থেকে জানা যায় যে, তিনি এই পদে কর্মরত থাকাকালীন সপরিবারে বিদেশে ভ্রমণের জন্য ছুটি নিয়েছিলেন, মুলত তিনি ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত নিশি রাতের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে (শেখ হাসিনা আর ক্ষমতায় আসবে না ভেবে) ভ্রমণের নামে অবৈধ উপায়ে উপার্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করে আসেন।

নির্বাচনের পর স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার গঠন করলে তিনি আবারো দেশে ফিরে এসে দূর্নীতিবাজ সাবেক সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম ও শাহাদাত হোসেন ও তৎকালীন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম কে ম্যানেজ করে বাগিয়ে নেন আওয়ামীলীগের তীর্থস্হানখ্যাত গোপালগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী (ই/এম), গণপূর্ত ই/এম পিএন্ডডি বিভাগ,  পদ ।

‘মুজিব কর্ণার’ও ‘বঙ্গবন্ধু গ্যালারি’র উদ্বোধন করছেন তৎকালীন গণপূর্ত ই/এম পিএন্ডডি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখর চন্দ্র বিশ্বাস

গোপালগঞ্জে থাকা অবস্থায় স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম কে খুশী করতে স্ব প্রণোদিত হয়ে নিজ উদ্যেগে বঙ্গবন্ধু গ্যালারি তৈরী করেন। শেখ সেলিম তার এই উদ্যেগে খুশী হয়ে  তাকে তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলীর কাছে সুপারিশ করে পদোন্নতি দিয়ে ২০২১ সালের ৭ই জানুয়ারি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, গণপূর্ত ই/এম ডিজাইন সার্কেল, ঢাকা এই পদে পদায়িত করেন।

নিয়মিত দায়ীত্বের বাইরে অতিরিক্ত যে সমস্ত দায়িত্ব পেয়ে দূর্নীতি ও অনিয়ম করেছেন—

*উত্তরা এপার্টমেন্ট প্রকল্পে- নির্বাহী প্রকৌশলী ( রিজার্ভ) পদে থাকাকালীন দূর্নীতি।

*খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের নতুন কার্যালয় এবং অডিটোরিয়াম নির্মান প্রকল্পে লিফট যাচাই বাচাই কারিগরি কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে জার্মানির লিফটের বদলে টাকা খেয়ে চায়না লিফটের অনুমোদন।

*বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) সমন্বিত কলকারখানা পরিদর্শন কার্যক্রমের জন্য তাকে ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল সেখান থেকে তিনি স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের আস্থাভাজন হয়ে দূর্নীতির মাধ্যমে শত কোটি টাকার বেশী অবৈধ ইনকাম করেন।

*গণপূর্ত অধিদপ্তরের  সিডিউলে সারা বাংলাদেশে অবস্থিত গণপূর্তের অফিসে  ওয়ালটন কোম্পানির তৈরি  লিফট একচেটিয়া   টেন্ডারের মাধ্যমে  স্থাপনের জন্য ওয়ালটনের টাকায় ইউরোপ ভ্রমন।

*আজিমপুরে পার্কিং শেড নির্মাণে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত কমিটির (সদস্য সচিব ) খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের ভাতিজা প্রকৌশলী নিয়াজ মোঃ তানভীর আলম কে বাঁচাতে টাকার বিনিময়ে মিথ্যা রিপোর্ট প্রদান।

 ভারতে টাকা পাচার (মানিলন্ডারিং):

শেখর চন্দ্র বিশ্বাসের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ হল মানিলন্ডারিং। দেশের বাহিরে তার প্রচুর অবৈধ সম্পদ রয়েছে। বিশ্বস্থ সূত্র জানিয়েছে, শেখর চন্দ্র বিশ্বাস দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ নামে বেনামে বিনিয়োগের পাশাপাশি হুন্ডির মাধ্যমে পাশের দেশ ভারতে পাচার করেছেন। এক বিশেষ অনুসন্ধানে জানা গেছে, কোলকাতার রাজারহাট নিউ টাউন এলাকায়  প্রকৌশলী শেখর চন্দ্র বিশ্বাস একটি বিলাসবহুল বাড়ী নির্মাণ করেছেন। এই ভবন নির্মাণের সমস্ত টাকা তিনি হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে পাচার করেছেন। এখানেই শেষ নয়,  প্রকৌশলী শেখর চন্দ্র বিশ্বাস অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডায়ও বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে ।

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ:

গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শেখর চন্দ্র বিশ্বাসের বাড়ি সিরাজগঞ্জে হলেও ঢাকায় তিনি গড়ে তুলেছেন একাধিক বাড়ি ও ফ্লাট। বিশেষ অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য মতে, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শেখর চন্দ্র বিশ্বাসের বাবা নিম্ন মধ্যবিত্ত হলেও রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার মোহাম্মদী হাউজিং সোসাইটির ৯ নং রোডের ৫/৭ নং আলিশান বাড়িটি কয়েক কোটি টাকা খরচ করে তৈরী করেছেন। এ ছাড়াও  মালিবাগ, ধানমন্ডি এবং বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় রয়েছে তার বিলাসবহুল পাঁচটি ফ্লাট এবং বাড়ী।

গত ৫ই আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমানোর অন্যতম ক্যারিশম্যাটিক কার্যালয়ে পরিণত হওয়া গণপূর্ত ই/এম ডিজাইন সার্কেল, ঢাকার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রয়েছেন শেখর চন্দ্র বিশ্বাস এখনো স্বমহিমায় উদ্ভাসিত।

ছাত্র জনতার এই আন্দোলন নস্যাৎ করতে সড়ক ভবনের নিজ কক্ষেমধ্যরাত পর্যন্ত ছাত্রলীগ আর যুবলীগ নেতাদের সাথে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকতেন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শেখর চন্দ্র বিশ্বাস । আর তার সকল অপকর্মে সঙ্গ দিতেন অফিস সহকারি কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ও হিসাব রক্ষক।

এই অফিস থেকেই তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শেখর চন্দ্র বিশ্বাস প্রতিদিন ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে মহানগর যুবলীগ ও ছাত্রলীগ ক্যাডারদের জন্য শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পাঠাতেন লক্ষ লক্ষ টাকা।

গত ৫ আগস্ট স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা দিল্লি পালালেও গণপূর্ত ই/এম ডিজাইন সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী  শেখর চন্দ্র বিশ্বাসের মতো তার দোসররা এখনও দেশের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে ঘাপটি মেরে রয়েছেন। তারা সুযোগ বুঝে লক্ষ্য অর্জনে ছলে বলে কৌশলে এমনকি বিগত সময়ের বিপুল পরিমাণ উপার্জিত অর্থ দিয়ে টার্গেট পূরণেও সক্ষম হচ্ছেন। শেখ হাসিনা পালালেও গণপূর্ত ই/এম ডিজাইন সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আওয়ামী দোসর শেখর চন্দ্র বিশ্বাসের মতো  হাসিনার অনেক পেতাত্মা রয়েছেন এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।

তারা বিগত সময়ে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট করে বিত্তশালী হয়েছেন। এখন তারাই সেই অর্থ দিয়ে দুর্নীতিবাজদের ম্যানেজ করে ফেলছেন। অন্যদিকে দুর্নীতিবাজরা রাতারাতি ভোল পাল্টিয়েও ফেলেছেন।

বহুল আলোচিত ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা সরকারের বিশ্বস্ত সহচর ও সাবেক ছাত্রলীগ ক্যাডার গণপূর্ত ই/এম ডিজাইন সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আওয়ামী দোসর শেখর চন্দ্র বিশ্বাসের নগ্ন হস্তক্ষেপে দিনাজপুর (সওজ) সড়ক বিভাগে কোটি কোটি টাকার ভয়াবহ লুটতন্ত্র কায়েম করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে,  প্রকৌশলী শেখর চন্দ্র বিশ্বাসের  ল্যান্ড ফোন ও তার হোয়াটসঅ্যাপে ফোন দেওয়া হলে  রিসিভ না করাই তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদ প্রতিদিন কে বলেন,  ‘যারা অতীতে দুর্নীতি করেছেন তাদের তালিকা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ নিয়ে কাজও শুরু হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

গণপূর্তে দুদকের অনুসন্ধানের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন সংবাদ প্রতিদিন কে বলেন, ‘ইতোমধ্যে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। সেখান থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত দুদকের টিম খতিয়ে দেখছে। তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে দুদক সেই প্রতিষ্ঠান বা অধিদপ্তরগুলোতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নিচ্ছে। আপনাদের মাধ্যমে গণপূর্তের এই প্রকৌশলীর বিষয়ে জানতে পারলাম তাই সুনির্দিষ্ট কোনো দুর্নীতির খবর আমরা সাংবাদিকদের মাধ্যমেও জানতে চাই। এতে আমরা কাজ করতে আরও সুবিধা হবে। সরকারি-বেসরকারি যেকোনো খাত কিংবা ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির খবরকে দুদক খুব গুরুত্বসহকারে নিচ্ছে।’

এই দুর্নীতিবাজ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী  ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তারপূর্বক আইনের আওতায় এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলে সচেতনমহল মনে করেন।

দীর্ঘদিন যাবৎ সিডিউলের তথ্য ফাঁস, লটারীর নামে নাটক, কমিশন  বাণিজ্যে ঠিকাদারদের ৭/৮ জনের ভাগ্য খুলতে সহায়তা করে নিজেও হয়েছেন শত-শত কোটি টাকার মালিক।

দুর্নীতিগ্রস্থ এই তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এখনো কীভাবে গণপূর্ত ই/এম ডিজাইন সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত আছেন তা খতিয়ে দেখতে দুদকের কঠোর হস্তক্ষেপসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাননীয় উপদেষ্টা এবং প্রধান প্রকৌশলীর সুদৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সচেতন মহল।

তীব্র প্রয়োজনের সময় রাসুল (সা.) যে দোয়া পড়তে বলেছেন

ইসলামী জীবন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ১:০৩ অপরাহ্ণ
   
তীব্র প্রয়োজনের সময় রাসুল (সা.) যে দোয়া পড়তে বলেছেন

মানুষের জীবনে অনেক সময় কোনো কিছুর তীব্র প্রয়োজন বা বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। স্বাভাবিকভাবে তা পূরণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। এমন কঠিন সময়ে রাসুল (সা.) দুই রাকত নামাজ পড়ে একটি দোয়া পড়তে বলছেন।

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ الْحَلِيمُ الْكَرِيمُ سُبْحَانَ اللَّهِ رَبِّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مُوجِبَاتِ رَحْمَتِكَ وَعَزَائِمَ مَغْفِرَتِكَ وَالْغَنِيمَةَ مِنْ كُلِّ بِرٍّ وَالسَّلاَمَةَ مِنْ كُلِّ إِثْمٍ أَسْأَلُكَ لاَ تَدَعَ لِي ذَنْبًا إِلاَّ غَفَرْتَهُ وَلاَ هَمًّا إِلاَّ فَرَّجْتَهُ وَلاَ حَاجَةً هِيَ لَكَ رِضًا إِلاَّ قَضَيْتَهَا لِي يا أرحمَ الراحمِين

উচ্চারণ : লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল হালিমুল কারিম।সুবহানাল্লাহি রাব্বিল আরশিল আজিম। আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। আসয়ালুকা মুজিবাতি রাহমাতিক ওয়া আজায়িমা মাগফিরাতিকা ওয়াল গানিমাতা মিন কুল্লি বিররিন ওয়াস-সালামাতা মিন কুল্লি ইসমিন। আসয়ালুকা লা তাদা লি জামবান ইল্লা গাফারতাহু ওয়ালা হাম্মান ইল্লা ফাররাজতাহু ওয়া লা হাজাতান হিয়া লাকা রিদান ইল্লা কাদাইতাহা লি ইয়া আরহামার রাহিমিন।

অর্থ : ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি অত্যন্ত ধৈর্যশীল ও দয়ালু। সব পবিত্রতা আরশের মালিক মহান আল্লাহর জন্য এবং সব প্রশংসা জগত্গুলোর প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। আমি আপনার কাছে অনুগ্রহ লাভের উপায়গুলো, ক্ষমা লাভের দৃঢ় অঙ্গীকার, প্রত্যেক ভালো কাজের প্রাচুর্য এবং মন্দ কাজ থেকে আশ্রয় কামনা করছি। আপনি আমার কোনো পাপ ক্ষমা না করে রাখবেন না, কোনো দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি না দিয়ে রাখবেন না, আপনার সন্তুষ্টিদায়ক কোনো প্রয়োজন ও চাহিদা পূরণ না করে রাখবেন না।

হে পরম দয়ালু মহান আল্লাহ।’

 

আবদুল্লাহ বিন আবি আওফা (রা.) বর্ণনা করেছেন, একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদেরকে বললেন, ‘যদি তোমাদের কারো আল্লাহর কাছে বা কোনো আদম সন্তানের কাছে কোনো কিছুর প্রয়োজন হয়, সে যেন ভালোকরে অজু করে এবং দুই রাকাত নামাজ আদায় করে। অতঃপর আল্লাহর প্রশংসা ও তাঁর রাসুলের প্রতি দরুদ পাঠ করে এই দোয়া পড়ে। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৪৭৯)

জমির দলিল করতে দাও লাখে লাখ—জেলা রেজিস্ট্রার আলী আকবরের নির্দেশে চাঁদপুরে চলছে “ঘুষের মহোৎসব”

ক্রাইম রিপোর্টার
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ১:০৯ পূর্বাহ্ণ
   
জমির দলিল করতে দাও লাখে লাখ—জেলা রেজিস্ট্রার আলী আকবরের নির্দেশে চাঁদপুরে চলছে “ঘুষের মহোৎসব”

জমি-জায়গা নিয়ে রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে ‘সংকটে’ পড়েননি বা ‘জিম্মি’ হতে হয়নি এমন কাউকে পাওয়া বিরল। বিশেষ করে অর্থনৈতিক হয়রানির শিকার হতে হয় সাধারণ মানুষকে।   বেতন পান তারা। অথচ ব্যতিক্রম ছাড়া কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার মালিক তারা। চাকরি করেন চাঁদ পুর জেলা রেজিস্ট্রার অফিসে  কিন্তু অট্টালিকা তুলেছেন জেলা কিংবা বিভাগীয় শহরে। রাজধানীতে ফ্ল্যাট। ছেলেমেয়েদের পড়ান বিদেশে। কীভাবে সম্ভব? একজন জেলা -রেজিস্ট্রার বেতন পান ন্যূনতম ২২ হাজার থেকে ৫৩ হাজার ৬০ টাকা।

এক জমির বহুবার মালিক বদল হয়। কেনা সূত্রে; উত্তরাধিকার সূত্রে; দান সূত্রে বদল হয় জমির দলিল। এই বদল করতে টাকায় টাকায় পার হতে হয় ‘ঘুষের ঘাট’। ধরা যাক; গ্রামের এক নিম্ন আয়ের মানুষ রেজিস্ট্রি অফিসে গেলেন। এরপর তার সামনে ভয়ংকর পিয়ন, উমেদার, নকলনবিশ সর্বোপরি সাব -রেজিস্ট্রার। কীভাবে একজন জেলা -রেজিস্ট্রার  কোটি কোটি টাকার মালিক?হয়

চাঁদপুর জেলা রেজিস্ট্রার আলী আকবর –

নকল তুলতে নেন ৪ হাজার টাকা। সরকারি ফি ছাড়া অতিরিক্ত নেন প্রায় ১২ গুণ। হেবা দলিল সম্পাদনা ফি মাত্র ১ হাজার ২৩০ টাকা। এর বদলে তিনি নেন ৬০ হাজার টাকা। অভিযোগ রয়েছে, শতাংশের হিসাব কষে ঘুষ নেন তিনি। না দিলে কাজ তো হবেই না, উল্টো দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে। অবশেষে বাধ্য হয়ে ঘুষ দিয়েই ফিরতে হবে।

দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) প্রতিনিয়ত সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের অনিয়ম ও দুর্নীতি-সংক্রান্ত অভিযোগ জমা পড়ছে। এসব অভিযোগের কোনোটি প্রাথমিক অনুসন্ধানে সত্যতা পেলে আবার কোনোটি এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের অভিযানে সত্যতা মিললে পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধান করছে সংস্থাটি।

দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে চাঁদ পুর জেলা রেজিস্ট্রার আলী আকবরের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুষগ্রহণ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের সত্যতা পাওয়ায় সম্প্রতি অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি

নারায়ণগঞ্জ সদর   সাব-রেজিস্ট্রার থাকাকালে ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে নিজের ও স্ত্রী-সন্তানের নামে রাজধানী সহ বিভিন্ন জায়গাতে ফ্লাট  কিনেছেন এবং  প্লট কেনাসহ ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন।

দুদকের তথ্যমতে, গত বছরের  নারায়ণগঞ্জ সদর   সাব-রেজিস্ট্রার  আলী আকবর  বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষবাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে  দুদকে। কমিশন অভিযোগটি অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নুর আলম সিদ্দিকীকে অনুসন্ধান করার নির্দেশ দেন

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের একজন কর্মকর্তা  বলেছেন, সাব-রেজিস্ট্রার থাকা কালে  নবম গ্রেডের একজন কর্মকর্তা হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। তিনি বর্তমানে মাসে ৬০-৭০ হাজার টাকা বেতন পান। তার এই চাকরি ছাড়া আর কোনো আয়ের উৎস নেই। অথচ নিজ একতলায়   একটি বাড়ি ও প্লট, ঢাকায় একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট,  প্লট কেনার অভিযোগ রয়েছে।

দুদকের কাছে অভিযোগে বলা হয়, চাঁদ পুর জেলা রেজিস্ট্রার  অফিসের মধ্যে সরকার নির্ধারিত ফি আদায়ের তালিকা টানানো থাকলেও তা মানা হয় না। তালিকায় বিভিন্ন প্রকৃতির দলিলের মধ্যে সাফ-কবলা, হেবা ঘোষণাপত্র, দানপত্র ও বন্ধকী দলিল সম্পাদনের জন্য পৃথক ফি উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, পেশকার, মুহুরি বা সংশ্লিষ্টদের সিন্ডিকেট সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত টাকা নিয়ে দলিল সম্পাদন করতে বাধ্য করে। প্রতিটি দলিল সম্পাদনের ক্ষেত্রে দলিলে উল্লিখিত জমির মূল্যের ওপর ১ শতাংশ টাকা অফিসকে দিতেই হয়। এই ১ শতাংশ টাকা অফিসকে না দিলে দলিল সম্পাদন হয় না। এ ছাড়া অফিসের মুহুরি ও অন্যান্য কর্মচারীর জন্য আলাদা খরচ দিতে হয়। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে সাধারণ মানুষ যেন জিম্মি।

অভিযোগে আরও বলা হয়  দলিল সম্পাদনে দীর্ঘদিন ধরে ফির নামে বাড়তি টাকা আদায় করা হয়। নির্ধারিত ফির বাইরে অতিরিক্ত টাকা না দিলে কোনো কাজ হতো না। জমি রেজিস্ট্রিকালে যে পরিমাণ অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়, তার একটি অংশ পেতেন জেলা -রেজিস্ট্রার। আলী আকবর  দায়িত্ব পালনকালে একই কায়দায় অর্জিত অর্থ আদায় করে নিজের ও স্ত্রী-সন্তানের নামে বাড়ি-গাড়িসহ বিপুল পরিমাণ সম্পদ কেনেন।

অভিযোগে বলা হয়, প্রতিটি হেবা-ঘোষণাপত্র দলিল রেজিস্ট্রির জন্য সরকার নির্ধারিত ফি রয়েছে ১ হাজার ২৩০ টাকা। কিন্তু ৫০ লাখ টাকা মূল্যমানের হেবা-ঘোষণাপত্র দলিল সম্পাদনের জন্য অফিসে গিয়ে একজন জমি ক্রেতার কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয় অন্তত ৬০ হাজার টাকা।

অভিযোগে আরও বলা হয়, একটি সাফ-কবলা দলিল সম্পাদনের জন্য সরকারি ফি হচ্ছে জমির মোট মূল্যের ওপর প্রতি লাখে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। কিন্তু সেখানে নেওয়া হয় লাখে প্রায় ১০ হাজার টাকা। আবার অফিসকে দিতে হয় জমির মোট মূল্যের ওপর আরও ১ শতাংশ। এতে সাধারণ মানুষকে মোটা অঙ্কের অর্থ গচ্চা দিতে হয়।

অভিযোগে বলা হয়, দানপত্র দলিল সম্পাদনের জন্য ২ শতাংশ উৎস কর নেওয়ার কোনো বিধান নেই। জমি ক্রেতা শহিদুল ইসলামের কাছ থেকে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মুহুরি ২ শতাংশ উৎসে করের টাকা নেন। এ ছাড়া অফিস খরচ বাবদ অতিরিক্ত আরও ১ শতাংশ টাকা নেন। অতিরিক্ত অর্থ না দিলে বিভিন্ন আইনি জটিলতা দেখিয়ে দলিল সম্পাদন বন্ধ রাখার হুমকি দেওয়া হয়। এ ছাড়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিলের একটি নকল ওঠাতে সরকারি ৩৩০ টাকা ফির স্থলে জমি ক্রেতাদের কাছ থেকে ৩-৪ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে জেলা -রেজিস্ট্রার  আলী আকবর  মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি

শাকিব খানের নায়িকা হচ্ছেন হানিয়া আমির

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:৪১ পূর্বাহ্ণ
   
শাকিব খানের নায়িকা হচ্ছেন হানিয়া আমির

গেল কয়েক বছরে শাকিব খানের ভেতর বেশ বদল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অভিনয়ে বৈচিত্র্য আনার পাশাপাশি নিজেকে নতুনভাবে উপস্থাপন করেও দর্শকদের চমকে দিচ্ছেন তিনি। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ের লুক, গেটআপ এবং নিজস্ব স্টাইলের কারণে তরুণ প্রজন্মের মাঝেও তিনি আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।

এই মুহূর্তে শাকিব খান তার নতুন ছবি ‘সোলজার’ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এরই মধ্যে নতুন খবর, আসন্ন একটি ছবিতে তার বিপরীতে দেখা যেতে পারে পাকিস্তানের আলোচিত অভিনেত্রী হানিয়া আমিরকে। এমন তথ্য নিজেই জানিয়েছেন শাকিব।

সম্প্রতি কনটেন্ট ক্রিয়েটর রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের একটি ভিডিওতে শাকিব খান মজা করে বলেন, তোমার অনেকগুলো ভ্লগ দেখলাম আমার ভবিষ্যৎ নায়িকার সঙ্গে, হানিয়ার সঙ্গে।

পাশ থেকে একজন জানতে চাইলে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, একটা সিনেমা নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনা চলছে।

এই মন্তব্য ছড়িয়ে পড়তেই শাকিব–ভক্তদের মাঝে তৈরি হয়েছে তীব্র উত্তেজনা। সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। তবে কোন ছবিতে হানিয়া আমিরকে দেখা যেতে পারে এ ব্যাপারে শাকিব এখনও কিছু নিশ্চিত করেননি।

তবে ভক্তরা ইতিমধ্যে ধারণা করা শুরু করেছেন। কারও মতে, ‘প্রিন্স’ ছবিতে শাকিব–হানিয়া জুটি দেখা যেতে পারে। আবার কেউ বলছেন, ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা নতুন রোমান্টিক ছবিটিতেও থাকতে পারেন তিনি।

উল্লেখ্য, ‘সোলজার’ ছবির শুটিং শেষ করে শাকিব খান ডিসেম্বর থেকে ‘প্রিন্স’ সিনেমার শুটিং শুরু করবেন। এরপর আগামী বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি আজমান রুশো পরিচালিত আরেকটি নতুন ছবির কাজে অংশ নেবেন, যার নাম এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

সেই ছবির নায়িকা হিসেবে একেবারে নতুন মুখ নেওয়ার পরিকল্পনাও চলছে বলে জানা গেছে।

You cannot copy content of this page