খুলনা দৌলতপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ‘আন্ডার ভ্যালু’ তত্তঃ নেপথ্যে কারিগর ১ যুগ ধরে একই অফিসে কর্মরত অফিস স্টাফ সোলাইমান কবির
খুলনা দৌলতপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস—নাম শুনলেই এখন সাধারণ মানুষ নয়, জমির মালিকরাও কেঁপে ওঠেন। কারণ এই অফিসেই চলছে কোটি টাকার ‘আন্ডার ভ্যালু বাণিজ্য’, যেখানে সরকারের রাজস্ব যাচ্ছে ভুয়া দামে আর পকেট ভরছে একদল দুর্নীতিবাজ কর্মচারীর।
এই পুরো ‘খেলার মাঠ’-এর মূল কারিগর হিসেবে নাম উঠেছে অফিসেরই এক স্টাফ, সোলাইমান কবিরের ।
🔹 আন্ডার ভ্যালু সিন্ডিকেটের নেপথ্যে সোলাইমান কবির!
দলিল রেজিস্ট্রেশনের প্রকৃত মূল্যকে অর্ধেকে নামিয়ে এনে ‘রাজস্ব ফাঁকি’ দেওয়াই এই সিন্ডিকেটের মূল খেলা। অভিযোগ উঠেছে, অফিসের ঘুষ-দালালি, দলিলের দাম নির্ধারণ, এমনকি কার ফাইল আগে হবে—সব কিছুই চলে সোলাইমান কবিরের ইশারায়।
দালালদের ভাষায় তিনি “অফিসের কিংমেকার”—কারণ তার অনুমতি ছাড়া কোনো আন্ডার ভ্যালু ফাইল পাশ হয় না।
একজন স্থানীয় দালাল নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন “সোলাইমান কবির ছাড়া এই অফিসে একটাও আন্ডার ভ্যালু দলিল হয় না। তার সিগন্যাল না পেলে কাজই বন্ধ।”
🔹 কোটি টাকার ফাঁকি, ভাগ যাচ্ছে অফিস ঘরে ঘরে
তদন্তে জানা গেছে—প্রতিটি দলিলের ক্ষেত্রে নির্ধারিত বাজারমূল্যের প্রায় অর্ধেক দামে দলিল নিবন্ধন করা হয়। ১ কোটি টাকার জমি দেখানো হয় ৪০ বা ৫০ লাখে। রাজস্ব কমে যায় লাখে লাখে, কিন্তু টাকা হারায় না—ওটা ভাগ হয়ে যায় অফিসের টেবিল ঘুরে ঘুরে।
একজন অসহায় দলিলদাতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমার জমির দলিলের দাম কম দেখিয়ে দিয়েছে। বলেছে, ‘উপরে দিতে হবে’। না দিলে ফাইল আটকে রাখবে!”
🔹 প্রশাসন ‘চুপ’, দালালচক্র ‘মজা’ নিচ্ছে
সবকিছু চোখের সামনে ঘটলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীরবতা রহস্যজনক। কেউ যেন কিছু দেখেও দেখছে না। স্থানীয় সূত্রের দাবি, প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থাকায় এই সিন্ডিকেট অদৃশ্য সুরক্ষা পাচ্ছে।
একজন স্থানীয় আইনজীবী বলেন, “দুর্নীতির এই চক্র যদি ভাঙা না হয়, তাহলে আগামী কয়েক বছরে সরকারের শত কোটি টাকা রাজস্ব হাওয়া হয়ে যাবে।”
🔹 ন্যায়ের দাবিতে জনগণ
এখন স্থানীয়দের দাবি—এই সিন্ডিকেটের মূল হোতা সোলাইমান কবিরসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
কারণ, একটি অফিস যদি রাজস্ব ফাঁকির কারখানায় পরিণত হয়, তাহলে রাষ্ট্রের মেরুদণ্ডই ভেঙে পড়ে।
খুলনা দৌলতপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে এখন চলছে দুর্নীতির প্রকাশ্য মহড়া। রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার, আর পকেট ফুলছে কিছু অসাধু কর্মচারীর।
এই ‘আন্ডার ভ্যালু সাম্রাজ্য’ যদি এখনই ধ্বংস না হয়, তাহলে এটি হবে—রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটের বৈধ চুক্তিপত্রের আরেক নাম!
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সোলাইমান কবির কলটি রিসিভ করেননি।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাব রেজিস্ট্রার এন এম তানভীর ইমন ও ফোন ধরেন নি৷

আপনার মতামত লিখুন