খুঁজুন
শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ৩০ কার্তিক, ১৪৩২

ত্যাগ সংগ্রাম আর আস্থার পুরস্কার পেয়েছিঃ চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী শরীফুজ্জামান শরীফ

শাহেদ আব্দুল্লাহ
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:১৬ পূর্বাহ্ণ
ত্যাগ সংগ্রাম আর আস্থার পুরস্কার পেয়েছিঃ চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী শরীফুজ্জামান শরীফ

চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের প্রার্থী জানিয়েছেন, দীর্ঘ ৩৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনের ত্যাগ, সংগ্রাম, দলের প্রতি আস্থা আর নেতা-কর্মীদের পাশে থাকার পুরস্কার হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) তাঁকে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের প্রার্থী করেছে।

তিনি মনে করেন, এর আগে ২০১৮ সালেও দল তার প্রতি আস্থা রেখেছিল। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শরীফুজ্জামান এক আলাপচারিতায় নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের আদ্যোপান্ত তুলে ধরে আরো উল্লেখ করেন, দলের নেতাকর্মীরা মনে করেন কেন্দ্রের সময়োপযোগী এ সিদ্ধান্ত আগামী দিনে এ আসনে ধানের শীষকে বিজয়ী করবে।

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার মুক্তিপাড়ার বাসিন্দা মো. শামসুজ্জোহা ও সাহিদা বেগমের ছয় সন্তানের মধ্যে তৃতীয় শরীফুজ্জামান ১৯৭৩ সালের ২৫ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন।তার বাবা মো. শামসুজ্জোহা একজন ধর্মপরায়ণ ব্যক্তি ছিলেন।

তিনি আলমডাঙ্গা উপজেলার পাঁচকমলাপুর গ্রামে একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। সেখানে বর্তমানে বিনা খরচে ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী লেখাপড়া ও থাকা-খাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।

পারিবারিকভাবে শিক্ষানুরাগী পরিবারের হওয়ায় ছোট থেকেই আধুনিক শিক্ষার সঙ্গে পরিচয় ঘটে শরীফের।শরীফ চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি ও স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্রজীবনে মানুষের সেবা করার ব্রত নিয়ে তিনি রাজনীতিতে নাম লেখান।

তিনি বরাবরই বিভিন্ন সামাজিক ও সেবামূলক কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। রাজনীতির বাইরে তার পরিবারের সমাজসেবার অনেক অবদান রয়েছে।চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের কারণে রোগী ও স্বজনদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে শরীফ নিজ অর্থায়নে সেখানে পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগ দিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, দরদি শরীফুজ্জামান দুঃখ দেখলেই তা দূর করতে দৌড়ান। সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গা শহরের সাতগাড়ীতে চান মিয়ার বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

এ পরিবারের সদস্যদের ‘আর্তনাদ’ শুনে ছুটে যান শরীফুজ্জামান। তিনি অর্থ ছাড়াও খাদ্য ও আসবাব দিয়ে সহায়তার পাশাপাশি ঘর মেরামতের দায়িত্বও নেন।ভুক্তভোগী চান মিয়া বলেন, ‘আবার নতুন করে ঘর হয়েছে।

সব সহায়তা করেছেন শরীফুজ্জামান শরীফ।’ শরীফুজ্জামান নিজেও প্রতি বছর চুয়াডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গা উপজেলার কয়েক শ মেধাবী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীর মধ্যে বৃত্তি বিতরণ করে আসছেন। অসংখ্য মানুষের চিকিৎসা, শিক্ষা ও অন্যান্য মানবিক সহায়তা দিতে ছুটেছেন ও ছুটছেন তিনি।

 

তার কাছ থেকে উপকার পাওয়া শিক্ষার্থী শামীমা খাতুন বলেন, ‘এসএসসিতে ভালো ফলাফলের পরও আর্থিক সংকটে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম।

বিএনপি নেতা শরীফুজ্জামানের উদ্যোগে শিক্ষা বৃত্তি পেয়ে আমি পড়শোনা চালিয়ে যাই। তাই শুধু নয়, পড়শোনা চালিয়ে যেতে আরো খরচের জোগান তিনিই দিয়েছেন।’ উপকার পাওয়া আরো একজন আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ক্যানসারে আক্রান্ত তার স্ত্রীর চিকিৎসা খরচ চালাতে শরীফুজ্জামান অকুণ্ঠ সহযোগিতা করেছেন। এলাকাবাসীও জানান, শরীফুজ্জামান নিজের খেয়ে এভাবেই মানুষের উপকার করে বেড়ান।

শরীফুজ্জামান জানান, তিনি শহীদ জিয়ার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৯০ সালে ছাত্রদলে যোগদানের মধ্য দিয়ে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। নিজ নেতৃত্বের গুণে ১৯৯৩ সালে চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রদলের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হন। যদিও নানা কারণে এ সম্মেলনে কমিটি ঘোষণা করেননি নেতারা। ১৯৯৫ সালে যুবদলের রাজনীতি যুক্ত হন এই রাজনীতিক। নানান ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে ২০১৭ সালে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির ২৮ নম্বর সদস্য হন শরীফ।

এরপর থেকেই দলের মধ্যে বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে এগিয়ে এসেছেন। আওয়ামী লীগের দমনপীড়ন উপেক্ষা কেন্দ্র ঘোষিত সব কর্মসূচি নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করার কারণে ২০১৮ সালে তাকে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেন। ২০২২ সালে ভেঙে পড়া বিএনপির যে কমিটি গঠন করা হয় তাতে শরীফুজ্জামান জেলা কমিটির সদস্য সচিব নির্বাচিত হন।

আগামী সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে বিএনপি বিজয়ী হবে বলে প্রত্যাশা করেন শরীফ। তিনি বলেন, জেলা, উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপিতে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে নির্বাচনি এলাকায় ২০৭টি কমিটি করা হয়েছে। ১৭১ সদস্য বিশিষ্ট এসব কমিটির সব সদস্য আমার সঙ্গে রয়েছে। যে কারণে আমি আগামী নির্বাচনে বিজয়ের স্বপ্ন দেখি।

চুয়াডাঙ্গা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের একাধিক নেতা-কর্মী বলেছেন, চুয়াডাঙ্গায় শামসুজ্জামান দুদুর মতো বড় মাপের নেতা আছেন। কিন্তু দলের দুঃসময়ে কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সংগ্রাম করেছেন শরীফুজ্জামান। যে কারণে দল প্রার্থী নির্বাচনে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভোটাররাও তাদের মূল্যবান রায়ে তা প্রমাণ করবেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা দোকান মালিক সমিতির সদস্য সচিব সুমন পারভেজ খান বলেন, ভঙ্গুর বিএনপিকে টেনে তুলেছেন শরীফুজ্জামান। জেলাবাসীর সেবা করার যে দায়িত্ব সেটি তারই প্রাপ্য। নেতা-কর্মীরা বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু এই চুয়াডাঙ্গারই সন্তান। কিন্তু তিনি সুখে-দুখে কখনই চুয়াডাঙ্গাবাসীর পাশে ছিলেন না। তিনিও এ আসনের প্রার্থী ছিলেন। তাকে মনোনীত করা হলে এ আসন ধরে রাখা কষ্টকর হতো। এজন্য দলের সঠিক সিদ্ধান্তে শরীফুজ্জামান প্রার্থী হওয়ায় তারা উৎফুল্ল বলে জানান।

চুয়াডাঙ্গা জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব বলেন, শামসুজ্জামান দুদু ঢাকায় থাকেন। তিনি বসন্তের কোকিল। নির্বাচন এলেই তাকে এলাকায় দেখা যায়। দলের দুঃসময়ে তাকে চুয়াডাঙ্গাবাসী কখনই পাশে পাননি।

একাধিক সাধারণ ভোটার তাদের মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ পেলে এ জেলার মানুষ কখনই নেতা নির্বাচনে ভুল করবে না। উন্নয়নের স্বার্থে তারা যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন করবে।

জমির দলিল করতে দাও লাখে লাখ—জেলা রেজিস্ট্রার আলী আকবরের নির্দেশে চাঁদপুরে চলছে “ঘুষের মহোৎসব”

ক্রাইম রিপোর্টার
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ১:০৯ পূর্বাহ্ণ
   
জমির দলিল করতে দাও লাখে লাখ—জেলা রেজিস্ট্রার আলী আকবরের নির্দেশে চাঁদপুরে চলছে “ঘুষের মহোৎসব”

জমি-জায়গা নিয়ে রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে ‘সংকটে’ পড়েননি বা ‘জিম্মি’ হতে হয়নি এমন কাউকে পাওয়া বিরল। বিশেষ করে অর্থনৈতিক হয়রানির শিকার হতে হয় সাধারণ মানুষকে।   বেতন পান তারা। অথচ ব্যতিক্রম ছাড়া কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার মালিক তারা। চাকরি করেন চাঁদ পুর জেলা রেজিস্ট্রার অফিসে  কিন্তু অট্টালিকা তুলেছেন জেলা কিংবা বিভাগীয় শহরে। রাজধানীতে ফ্ল্যাট। ছেলেমেয়েদের পড়ান বিদেশে। কীভাবে সম্ভব? একজন জেলা -রেজিস্ট্রার বেতন পান ন্যূনতম ২২ হাজার থেকে ৫৩ হাজার ৬০ টাকা।

এক জমির বহুবার মালিক বদল হয়। কেনা সূত্রে; উত্তরাধিকার সূত্রে; দান সূত্রে বদল হয় জমির দলিল। এই বদল করতে টাকায় টাকায় পার হতে হয় ‘ঘুষের ঘাট’। ধরা যাক; গ্রামের এক নিম্ন আয়ের মানুষ রেজিস্ট্রি অফিসে গেলেন। এরপর তার সামনে ভয়ংকর পিয়ন, উমেদার, নকলনবিশ সর্বোপরি সাব -রেজিস্ট্রার। কীভাবে একজন জেলা -রেজিস্ট্রার  কোটি কোটি টাকার মালিক?হয়

চাঁদপুর জেলা রেজিস্ট্রার আলী আকবর –

নকল তুলতে নেন ৪ হাজার টাকা। সরকারি ফি ছাড়া অতিরিক্ত নেন প্রায় ১২ গুণ। হেবা দলিল সম্পাদনা ফি মাত্র ১ হাজার ২৩০ টাকা। এর বদলে তিনি নেন ৬০ হাজার টাকা। অভিযোগ রয়েছে, শতাংশের হিসাব কষে ঘুষ নেন তিনি। না দিলে কাজ তো হবেই না, উল্টো দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে। অবশেষে বাধ্য হয়ে ঘুষ দিয়েই ফিরতে হবে।

দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) প্রতিনিয়ত সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের অনিয়ম ও দুর্নীতি-সংক্রান্ত অভিযোগ জমা পড়ছে। এসব অভিযোগের কোনোটি প্রাথমিক অনুসন্ধানে সত্যতা পেলে আবার কোনোটি এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের অভিযানে সত্যতা মিললে পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধান করছে সংস্থাটি।

দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে চাঁদ পুর জেলা রেজিস্ট্রার আলী আকবরের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুষগ্রহণ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের সত্যতা পাওয়ায় সম্প্রতি অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি

নারায়ণগঞ্জ সদর   সাব-রেজিস্ট্রার থাকাকালে ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে নিজের ও স্ত্রী-সন্তানের নামে রাজধানী সহ বিভিন্ন জায়গাতে ফ্লাট  কিনেছেন এবং  প্লট কেনাসহ ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন।

দুদকের তথ্যমতে, গত বছরের  নারায়ণগঞ্জ সদর   সাব-রেজিস্ট্রার  আলী আকবর  বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষবাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে  দুদকে। কমিশন অভিযোগটি অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নুর আলম সিদ্দিকীকে অনুসন্ধান করার নির্দেশ দেন

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের একজন কর্মকর্তা  বলেছেন, সাব-রেজিস্ট্রার থাকা কালে  নবম গ্রেডের একজন কর্মকর্তা হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। তিনি বর্তমানে মাসে ৬০-৭০ হাজার টাকা বেতন পান। তার এই চাকরি ছাড়া আর কোনো আয়ের উৎস নেই। অথচ নিজ একতলায়   একটি বাড়ি ও প্লট, ঢাকায় একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট,  প্লট কেনার অভিযোগ রয়েছে।

দুদকের কাছে অভিযোগে বলা হয়, চাঁদ পুর জেলা রেজিস্ট্রার  অফিসের মধ্যে সরকার নির্ধারিত ফি আদায়ের তালিকা টানানো থাকলেও তা মানা হয় না। তালিকায় বিভিন্ন প্রকৃতির দলিলের মধ্যে সাফ-কবলা, হেবা ঘোষণাপত্র, দানপত্র ও বন্ধকী দলিল সম্পাদনের জন্য পৃথক ফি উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, পেশকার, মুহুরি বা সংশ্লিষ্টদের সিন্ডিকেট সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত টাকা নিয়ে দলিল সম্পাদন করতে বাধ্য করে। প্রতিটি দলিল সম্পাদনের ক্ষেত্রে দলিলে উল্লিখিত জমির মূল্যের ওপর ১ শতাংশ টাকা অফিসকে দিতেই হয়। এই ১ শতাংশ টাকা অফিসকে না দিলে দলিল সম্পাদন হয় না। এ ছাড়া অফিসের মুহুরি ও অন্যান্য কর্মচারীর জন্য আলাদা খরচ দিতে হয়। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে সাধারণ মানুষ যেন জিম্মি।

অভিযোগে আরও বলা হয়  দলিল সম্পাদনে দীর্ঘদিন ধরে ফির নামে বাড়তি টাকা আদায় করা হয়। নির্ধারিত ফির বাইরে অতিরিক্ত টাকা না দিলে কোনো কাজ হতো না। জমি রেজিস্ট্রিকালে যে পরিমাণ অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়, তার একটি অংশ পেতেন জেলা -রেজিস্ট্রার। আলী আকবর  দায়িত্ব পালনকালে একই কায়দায় অর্জিত অর্থ আদায় করে নিজের ও স্ত্রী-সন্তানের নামে বাড়ি-গাড়িসহ বিপুল পরিমাণ সম্পদ কেনেন।

অভিযোগে বলা হয়, প্রতিটি হেবা-ঘোষণাপত্র দলিল রেজিস্ট্রির জন্য সরকার নির্ধারিত ফি রয়েছে ১ হাজার ২৩০ টাকা। কিন্তু ৫০ লাখ টাকা মূল্যমানের হেবা-ঘোষণাপত্র দলিল সম্পাদনের জন্য অফিসে গিয়ে একজন জমি ক্রেতার কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয় অন্তত ৬০ হাজার টাকা।

অভিযোগে আরও বলা হয়, একটি সাফ-কবলা দলিল সম্পাদনের জন্য সরকারি ফি হচ্ছে জমির মোট মূল্যের ওপর প্রতি লাখে সাড়ে ৭ হাজার টাকা। কিন্তু সেখানে নেওয়া হয় লাখে প্রায় ১০ হাজার টাকা। আবার অফিসকে দিতে হয় জমির মোট মূল্যের ওপর আরও ১ শতাংশ। এতে সাধারণ মানুষকে মোটা অঙ্কের অর্থ গচ্চা দিতে হয়।

অভিযোগে বলা হয়, দানপত্র দলিল সম্পাদনের জন্য ২ শতাংশ উৎস কর নেওয়ার কোনো বিধান নেই। জমি ক্রেতা শহিদুল ইসলামের কাছ থেকে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের মুহুরি ২ শতাংশ উৎসে করের টাকা নেন। এ ছাড়া অফিস খরচ বাবদ অতিরিক্ত আরও ১ শতাংশ টাকা নেন। অতিরিক্ত অর্থ না দিলে বিভিন্ন আইনি জটিলতা দেখিয়ে দলিল সম্পাদন বন্ধ রাখার হুমকি দেওয়া হয়। এ ছাড়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিলের একটি নকল ওঠাতে সরকারি ৩৩০ টাকা ফির স্থলে জমি ক্রেতাদের কাছ থেকে ৩-৪ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে জেলা -রেজিস্ট্রার  আলী আকবর  মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি

শাকিব খানের নায়িকা হচ্ছেন হানিয়া আমির

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:৪১ পূর্বাহ্ণ
   
শাকিব খানের নায়িকা হচ্ছেন হানিয়া আমির

গেল কয়েক বছরে শাকিব খানের ভেতর বেশ বদল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অভিনয়ে বৈচিত্র্য আনার পাশাপাশি নিজেকে নতুনভাবে উপস্থাপন করেও দর্শকদের চমকে দিচ্ছেন তিনি। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ের লুক, গেটআপ এবং নিজস্ব স্টাইলের কারণে তরুণ প্রজন্মের মাঝেও তিনি আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।

এই মুহূর্তে শাকিব খান তার নতুন ছবি ‘সোলজার’ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এরই মধ্যে নতুন খবর, আসন্ন একটি ছবিতে তার বিপরীতে দেখা যেতে পারে পাকিস্তানের আলোচিত অভিনেত্রী হানিয়া আমিরকে। এমন তথ্য নিজেই জানিয়েছেন শাকিব।

সম্প্রতি কনটেন্ট ক্রিয়েটর রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের একটি ভিডিওতে শাকিব খান মজা করে বলেন, তোমার অনেকগুলো ভ্লগ দেখলাম আমার ভবিষ্যৎ নায়িকার সঙ্গে, হানিয়ার সঙ্গে।

পাশ থেকে একজন জানতে চাইলে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, একটা সিনেমা নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনা চলছে।

এই মন্তব্য ছড়িয়ে পড়তেই শাকিব–ভক্তদের মাঝে তৈরি হয়েছে তীব্র উত্তেজনা। সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। তবে কোন ছবিতে হানিয়া আমিরকে দেখা যেতে পারে এ ব্যাপারে শাকিব এখনও কিছু নিশ্চিত করেননি।

তবে ভক্তরা ইতিমধ্যে ধারণা করা শুরু করেছেন। কারও মতে, ‘প্রিন্স’ ছবিতে শাকিব–হানিয়া জুটি দেখা যেতে পারে। আবার কেউ বলছেন, ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা নতুন রোমান্টিক ছবিটিতেও থাকতে পারেন তিনি।

উল্লেখ্য, ‘সোলজার’ ছবির শুটিং শেষ করে শাকিব খান ডিসেম্বর থেকে ‘প্রিন্স’ সিনেমার শুটিং শুরু করবেন। এরপর আগামী বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি আজমান রুশো পরিচালিত আরেকটি নতুন ছবির কাজে অংশ নেবেন, যার নাম এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

সেই ছবির নায়িকা হিসেবে একেবারে নতুন মুখ নেওয়ার পরিকল্পনাও চলছে বলে জানা গেছে।

“২৫০ অবৈধ নিয়োগ, কোটি টাকার আমানত—সিসিক কর্মচারী সোহেলের ‘অন্ধকারের সাম্রাজ্য’ উন্মোচিত”

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:২২ পূর্বাহ্ণ
   
“২৫০ অবৈধ নিয়োগ, কোটি টাকার আমানত—সিসিক কর্মচারী সোহেলের ‘অন্ধকারের সাম্রাজ্য’ উন্মোচিত”

২০০৬ সালে চাকরি। বেতন ছিল মাত্র ৩০০০ টাকা। পদ সিলেট সিটি করপোরেশনের আদায়কারী। এভাবেই কর্মজীবন শুরু সোহেল আহমদের। তারপর কেটে গেছে দীর্ঘ সময়। প্রায় দুই দশক। সেই সোহেল এখন আর সামান্য বেতনের কর্মচারী নন। তখন দুই বেলা পেট ভরে খেতে না পেলেও এখন তিনি থাকেন সিলেট শহরের অভিজাত এলাকায়। আছে নামে-বেনামে সম্পদ। নিজের এবং স্ত্রীর নামে শহরের অভিজাত এলাকাগুলোতে গড়ে উঠেছে একাধিক বহুতল ভবন। রয়েছে দামি গাড়ি। শপিং মলে দোকান। বিপুল পরিমাণ জমি।

আর আছে ব্যাংকে কোটি টাকার আমানত। সামান্য বেতনের সোহেলের এই উত্থান রাজকীয়। তার কাছে সিলেট সিটি করপোরেশন-সিসিক রীতিমতো আলাদীনের চেরাগ। সিসিকে চাকরি হওয়ার পরপরই পাল্টে যেতে শুরু করে তার একসময় দুই বেলা পেট ভরে খেতে না পেলেও এখন তিনি থাকেন অভিজাত এলাকায়। চলনে-বলনে আসে পরিবর্তন। তিনি প্রথমদিকে আশীর্বাদ লাভ করেন সিসিকে দুর্নীতির কিং প্রশাসনিক কর্মকর্তা হানিফুর রহমানের। তার ছায়াতলে আশ্রয় নেওয়ার পর আর কে পায় তার নাগাল। তিনি দরিদ্রতাকে পেছনে ফেলেন। তার সবচেয়ে সেরা সময় আসে যখন তিনি সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর ব্যক্তিগত ‘একান্ত সুযোগ পাল্টে দেয় তার পেছনের চেনা জগৎ।

ঘোর অন্ধকারের পর তার জীবনের পূর্বাকাশে উদিত হয় টাকার সূর্য। তিনি শূন্য থেকে রাতারাতি বনে যান কোটিপতি। গড়ে তোলেন কোটি কোটি টাকার সম্পদের পাহাড়! সোহেল আহমদ হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান। যার জীবন চলত ধার-দেনায়। তিনি এখন বিলাসবহুল ভবনের মালিক। বিশ্বের একাধিক দেশে ভ্রমণকারী। অভিযোগ রয়েছে, তৎকালীন মেয়রের ‘একান্ত সহকারী’ হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেন হানিফুর রহমান। নিজের খায়েশ পূরণ করতে তারই একান্তজনকে ভিড়িয়ে দেন মেয়রের পাশে।

তার মাধ্যমেই হানিফ সাবেক মেয়রের কাছ থেকে অনেক সুবিধা বাগিয়ে নিতে পেরেছিলেন। এর পর থেকেই সোহেল সিটি করপোরেশনের ভেতরকার অদৃশ্য শক্তিতে পরিণত হন। নিয়োগ, প্রমোশন, টেন্ডার- সর্বত্র ছিল তার একচেটিয়া আধিপত্য। তাকে ব্যবহার করে হানিফ গড়ে তোলেন নিজের দুর্নীতির সাম্রাজ্য। ওই সিন্ডিকেটের প্রধান দুই ব্যক্তি ছিলেন হানিফ-সোহেল। এই জুটিই সিসিকের ভেতরের বেশির ভাগ কাজ নিয়ন্ত্রণ করতেন। তারা চাকরি দেওয়ার নামে প্রার্থীদের কাছ থেকে নিতেন মোটা অঙ্কের টাকা। চাকরিপ্রার্থী নারীদের রেস্টুরেন্টে ডেকে নিয়ে দেওয়া হতো অনৈতিক প্রস্তাব। কেউ রাজি হলে চাকরি হতো। না হলে দিনের পর দিন ঘুরেও শেষমেশ তারা চাকরি থেকে বঞ্চিত হতেন। এমন অভিযোগ মিলেছে বিভিন্ন সূত্র থেকে।
বর্তমানে সোহেলের বেতন ৩০ হাজার টাকা।

এই টাকায় সংসার চালিয়ে কীভাবে বাড়ি-গাড়ির মালিক হলেন? কীভাবে তার পাসপোর্টে এক ডজন দেশের ভিসা লাগিয়ে সেইসব দেশ ভ্রমণ করলেন? তা-ও আবার কখনো কখনো সপরিবারে! কীভাবে তার নামে একাধিক ভবন, কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স?- এমন প্রশ্ন সিসিকের অনেকেরই।
অভিযোগ আছে, গত এক দশকে গোপনে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ২৫০-এরও বেশি কর্মচারী।

তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে ২ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। তার হাত ধরে নিয়োগ পাওয়া অনেকেই আজ কর শাখা, পানি শাখা, পরিবহন ও প্রকৌশল শাখায় গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন শাখা থেকে মাসিক মাসোহারা আদায় ছিল তার নিয়মিত আয়। এখন সময় এসেছে প্রশ্ন তোলার- এই চোরেরা আর কত দিন আমাদের টাকায় রাজত্ব করবে? রাষ্ট্রীয় চাকরি কি শুধুই ঘুষ, অনৈতিক প্রস্তাব আর স্বজনপ্রীতির হাতিয়ার হয়ে থাকবে? আমরা কি এইসব ‘আধুনিক চোরদের’ জন্য চুপ করে থাকব?

এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে সোহেল আহমদ কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তার মন্তব্য, সব অভিযোগ মিথ্যা। এগুলো তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।

You cannot copy content of this page