ভূয়া সাব রেজিস্ট্রার লুৎফর রহমান মোল্লা চাকরীর শেষ সময়ে ” জলঢাকাকে ঢেকে ফেলেছেন” ঘুষ আর দুর্নীতির চাদরে
নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার সাব রেজিস্ট্রার লুৎতফর রহমান মোল্লা যার বয়স মুক্তিযোদ্ধার চলাকালীন মাএ ৫ বছর ছিল এখন তিনি মুক্তিযোদ্ধা” কথাটা কল্পনা মনে হলে আসলে তা বাস্তব শুধু তাই নয় সেই মুক্তিযুদ্ধার সার্টিফিকেট জমা দিয়ে ভাগিয়ে নিয়েছেন সাব রেজিস্ট্রার পদ এবং হয়েছেন মুজিব নগর সরকারের কর্মচারী এখন সাধারন জনগনের প্রশ্ন? ৫ বছরের একটি শিশু বাচ্চা কিভাবে যুদ্ধ করলেন আর এখন কিভাবে মুক্তিযোদ্ধা হলেন।
সাব রেজিস্ট্রার লুৎফর রহমান মোল্লা সাব রেজিস্ট্রার হওয়ার আগে ছিলেন একজন আমিনে সহকারী ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী হিসেবে ১৮৯ জনের সাব-রেজিস্ট্রার পদে চাকরি হয় উচ্চ আদালতের নির্দেশে। তাদের মধ্যে লুৎফর রহমান একজন। স্বৈরাচার সরকার আওয়ামী লীগের ক্ষমতা ব্যবহার করে এই সাব রেজিস্ট্রার লুৎফর রহমান মোল্লা ঘুষ দুর্নীতি মাধ্যমে জাল দলিল করে বনে যান অঢেল সম্পদের মালিক যা দুদকের নজরের আড়ালে।
২০১৬ সালে দিকে সাতক্ষীরা সদর সাব-রেজিস্ট্রার ছিলেন লুৎফর রহমান মোল্লা । জাল দলিল করার কারনে। ওই বছরের ১৫ মে তিনি ও দলিল লেখক মুনসুর রহমান জাল দলিল করার কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হাতে আটক হয়েছিলেন। কিন্তুু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলের সাথে জড়িত থাকার কারণে তাকে বেশি দিন এর ভোগ পোহাতে হয়নি।
১৭।১১।২৪ইং তারিখে তাহমিনা আক্তার বাদী হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বরাবর সাব রেজিস্ট্রার লুৎফর রহমান মোল্লার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দাখিল করে যা আজও আলোর মুখ দেখেনি। সাব রেজিস্ট্রার লুৎফর রহমান মোল্লা তার অবৈধ উপার্জনের অর্থ দিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হাওয়া ফাইলগুলো ধামাচাপার দিয়ে রাখেন যাতে করে তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ সহজে প্রমাণিত না হয়।
ঘুষ দুর্নীতি ও জাল দলিল বাণিজ্যের মাস্টারমাইন্ড দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় লুটেরা কথিত সাব রেজিস্ট্রার লুৎফর রহমান মোল্লা। তিনি মুজিবনগর সরকারের কথিত কর্মচারী ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা ও ভূয়া শিক্ষা সনদে ২০০৯ সালে চড়ামূল্যে বাগিয়ে নেন সাব রেজিস্ট্রারের মতো লোভনীয় পদ। এরপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি। ভূয়া সাব রেজিস্ট্রার ও শীর্ষতম কালোটাকার পাহাড় গড়ে তোলা বরিশালের অসীম কল্লোল, ধানমন্ডি খ্যাত আবুল হোসেন, নরসিংদী সদর থেকে সদ্য অবসরে যাওয়া সোহরাব হোসেন সরকার, রূপগঞ্জ খ্যাত খোন্দকার গোলাম কবির, নোয়াখালী আবু হেনা মোস্তফা কামাল, রংপুর সদর ও পীরগাছার আলোচিত সাব রেজিস্ট্রার রাম জীবন কুন্ডু, বাগেরহাট মোংলার স্বপন কুমার দে, কিশোরগঞ্জ সদর খ্যাত মিনতী দাস (বর্তমানে ফরিদপুর সদর) ও মিনতী দাসের স্বামী পরিতোষ দাস, ধামরাই কামালপুর খ্যাত মঞ্জুরুল আলম ( বর্তমানে লালমোহন ভোলা), মো: ফারুক পটুয়াখালী সদর, খেপুপাড়ার কাজী নজরুল ইসলাম, কালিয়াকৈর ও টাঙ্গাইল খ্যাত নুরুল আমিন তালুকদার, কেরানীগঞ্জ ও গাজীপুরের শ্রীপুর খ্যাত বর্তমানে কাপাসিয়ার সাব রেজিস্ট্রার ওসমান গণি মন্ডল, মুক্তিয়ারা খাতুন প্রমূখদের ন্যায় লুৎফর রহমান মোল্লাও এখন কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক। নামে বেনামে গড়েছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। রয়েছে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ।
১লা জানুয়ারি ১৯৬৬ সালে মাদারীপুরে কৃষক পরিবারে জন্ম নেন লুৎফর রহমান মোল্লা। অনেক কষ্টে গ্যাপ দিয়ে দিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করলেও বিএ পাশ করতে পারেননি। অথচ টাকা ও আওয়ামী নেতাদের তদবিরে তৎকালীন মন্ত্রী আমিনুল ইসলামকে ম্যানেজ করে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও বিএ পাশের ভূয়া সনদে হাতিয়ে নেন সাব রেজিস্ট্রার পদ
২০০৭ সালের ৭ই ডিসেম্বর চাকরি পেয়ে খুলনার তেরখাদা- ফুলতলা, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী ও মুকসুদপুর, সাতক্ষীরা সদর, মাগুরা সদর, ঢাকার ধানমন্ডি, কিশোরগঞ্জ সদর, মুকসুদপুর, আবার ঢাকার উত্তরায় এসে শেখ হাসিনার পেতাত্মাদের তথা শীর্ষ আওয়ামী নেতাদের মিশন সাকসেস করতে ত্রাতার ভূমিকায় আবির্ভূত হন লুৎফর রহমান মোল্লা।।
নীলফামারীর জলঢাকায় সাব-রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ লুৎফর রহমান মোল্লাকে কেন্দ্র করে মুক্তিযোদ্ধা খেতাব ও দুর্নীতির অভিযোগে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তার জন্মতারিখ ও মুক্তিযুদ্ধকালীন বয়স নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠে আসছে, যা সরকারের মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি সন্দেহ সৃষ্টি করেছে।
জন্ম ও মুক্তিযুদ্ধকালীন বয়স নিয়ে প্রশ্ন:
জানা যায়, মো. লুৎফর রহমান মোল্লার জন্ম তারিখ ১ জানুয়ারি ১৯৬৬। যদি এই তথ্য সঠিক হয়, তাহলে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স মাত্র পাঁচ বছর ছিল। ৫ বছর বয়সে বীর মুক্তিযোদ্ধার খেতাব পাওয়া কিভাবে সম্ভব, এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে তীব্র প্রশ্ন উঠেছে। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করা হচ্ছে।
ব্যক্তিগত তথ্য ও সরকারি দায়িত্ব পালন:
তার গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলার তরমুগুরিয়া মাষ্টার কলোনীতে। বর্তমানে তিনি ঢাকা শহরের শান্তিনগরে নিজস্ব ক্রয়কৃত ফ্ল্যাটে বসবাস করেন। তবে সরকারি কাজে নিয়মিত ফাঁকি দিয়ে ঢাকায় বেশি সময় কাটানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ:
বিগত দিন পর্যন্ত গুলশান সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দায়িত্ব পালনকালে মো. লুৎফর রহমান মোল্লার বিরুদ্ধে জমির রেজিস্ট্রির মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ উঠেছিল। বিশেষ করে একটি ১০ তলা ভবনের ২৭টি ফ্ল্যাট একত্রে জমির অংশ হিসাবে রেজিস্ট্রি করা হয়, যা আইন এবং নিয়মের পরিপন্থী বলে মনে করা হয়। এছাড়াও নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্ট থাকার কথাও আলোচনায় এসেছে।
সাতক্ষীরা সদরে সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় দুর্নীতির দায়ে তিনি এক পর্যায়ে কারাদণ্ড ভোগ করেন। এরপর তিনি স্থানান্তরিত হন।
বদলি ও নতুন পদায়ন:
সম্প্রতি মো. লুৎফর রহমান মোল্লাকে ঢাকা উত্তরার সাব-রেজিস্ট্রার পদ থেকে বদলি করে নীলফামারীর জলঢাকায় পদায়ন করা হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নতুন কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চাকরিতে নিয়োগ ও মুক্তিযোদ্ধা সংক্রান্ত বিতর্ক
২০০৯ সালের ৭ ডিসেম্বর মো. লুৎফর রহমান মোল্লা সাব-রেজিস্ট্রার পদে যোগদান করেন। এক মামলার রায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় তিনি সরকারি চাকরি পান। তবে তার জন্মতারিখ ও মুক্তিযুদ্ধকালীন বয়স নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক রয়েছে। সরকারি চাকরি পাওয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কিত প্রমাণপত্রাদি জমা দিতে হয়, তবে মো. লুৎফর রহমানের বয়স ও মুক্তিযোদ্ধা সংক্রান্ত তথ্য যাচাই-বাছাই নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
প্রতিক্রিয়া ও পরবর্তী পদক্ষেপ:
সংবাদ প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট সরকারি মন্ত্রণালয়, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও জনমত চাঞ্চল্যকর প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে এমন ব্যক্তিকে বীর মুক্তিযোদ্ধার খেতাব দেওয়া হলো এবং কীভাবে তিনি সরকারি পদে নিয়োগ পেলেন। সরকারি হিসাব-নিকাশে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা মোকাবিলায় যথাযথ তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে।
এ বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মো. লুৎফর রহমান মোল্লা কোন মন্তব্য করেননি। তবে কিছু উৎস বলছে, দুর্নীতি ও সমালোচনার পেছনে রাজনৈতিক প্রভাব এবং আওয়ামী লীগ সরকারের অবহেলার অভিযোগ রয়েছে।
এত দুর্নীতি করার পরও ধরাছোঁয়ার বাইরে ভূয়া সার্টিফিকেটের নিয়োগপ্রাপ্ত সাব রেজিস্ট্রার লুৎফর রহমান মোল্লা। তাহলে কি সাধারণ জনগণ বুঝে নিবে আইনে চোখ কি আসলেই অন্ধ।
এ সকল বিষয়ে সাব রেজিস্ট্রার লুৎফর রহমান মোল্লাকে একাধিকবার ফোন করা হলে ফোনটি তিনি রিসিভ করেননি।

আপনার মতামত লিখুন