রাজধানীর পল্লবী সাব রেজিস্ট্রি অফিসে রমরমা দলিল বাণিজ্যঃ নেপথ্যে কারিগর উমেদার রাজিব, জসিম ও স্বয়ং সাব রেজিস্ট্রার জাহিদুল হক
ত্রিশালের বিতর্কিত সাব রেজিস্ট্রার গাজীপুর নিবাসী জাহিদুল হক পল্লবীতে যোগদান করেই হাত মিলিয়েছেন রাজিব- জসিম সিন্ডিকেটের সাথে। এম্নিতেই পল্লবী সাব রেজিস্ট্রি অফিস থাকে সারাবছর সংবাদ শিরোনামে। জাহিদুল হক যোগদানের পর যারা তার অতীত ইতিহাস জানেন না, তারা ভেবেছিলেন এলাকার সন্তান আইন বিষয়ে ( LLM) পড়াশুনা জানা জাহিদুল হকের হাতের ছোঁয়ায় পাল্টে যাবে বেআইনী সকল কর্মযজ্ঞ। না তা হয়নি ভূক্তভোগীদের মুখ পুড়লো আবারো। ১০ই ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তেজগাঁও রেজিষ্ট্রেশন কমপ্লেক্সের পল্লবী সাব রেজিস্ট্রি অফিসে যোগদান এবং জসিম, রাজিবসহ দালাল সিন্ডিকেটের সাথে হাত মেলানোর কারণে আশাহত হয়েছেন পল্লবীর মানুষ।
সারাবছর পল্লবী সাব রেজিস্ট্রারের সহযোগিতায় কথায় কথায় জমির শ্রেণী পরিবর্তন, নামজারি ছাড়াই জমি রেজিষ্ট্রি, ভলিউম টেম্পারিং, এনআইডি পরিবর্তন, জাল বা ভূয়া এনআইডি দিয়ে জমি সম্পাদন, ডেভলোপার কোম্পানীর সাথে যোগসাজশে ফ্রেশ ভিটা জমিকে পরিত্যক্ত ডোবানালা দেখিয়ে সরকারী রাজস্ব লোপাট করে দলিল সম্পাদন এ অফিসের নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। আর এবার এসব দুর্নীতির পালে আরো বেশি হাওয়া লেগেছে আইন পেশায় না যেয়ে রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার মিশনে যোগ দেওয়া ত্রিশাল ও গোপালপুরের আলোচিত সাব রেজিস্ট্রার জাহিদুল হকের যোগদানের মাধ্যমে।
পল্লবী সাব রেজিস্ট্রার অফিসে ৬০ টাকার উমেদার রাজিব, জসিমসহ সকল স্টাফ অনেক আগেই হয়েছেন কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক।। শুধু পল্লবী নয় জসিম রাজিব সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে থাকে তেজগাঁও রেজিষ্ট্রেশন কমপ্লেক্সের ৭ টি সাব রেজিস্ট্রার অফিস। যা জানতেন সাবেক জেলা রেজিস্ট্রার সাবেকুন নাহার, অহিদুল ইসলাম আর এখন অবগত আছেন বর্তমান জেলা রেজিস্ট্রার মুন্সি মোখলেছুর রহমান।
৫ ই আগস্ট ২০২৪ এর আগ পর্যন্ত এরা নিজেকে সবসময় পরিচয় দিতেন টুঙ্গিপাড়ার লোক বলে। আর সাব রেজিস্ট্রার জাহিদুল নিজেও কর্মস্থলগুলোতে পরিচয় দিতেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও নামের পদবীতে মিল থাকায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নিকট আত্মীয় হিসেবে।
এর আগে ত্রিশালে চাকরি করাকালীন সময়ে ১৪৪ ধারা জারি থাকা জমি গোপন চুক্তির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণের ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে রেজিষ্ট্রেশন করে দেন জাহিদুল হক।
সাবরেজিস্ট্রার বেতনের বাইরেও ত্রিশাল সাবরেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলামকে সাথে নিয়ে নিজ ঝুলিতে ভর্তি করেন ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা বলে সেখানকার অফিস স্টাফদের মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে।।
১১ নভেম্বর ২০২৩ সাবরেজিস্ট্রার জাহিদের জমা দেয়া সরকারি কর্মকর্তার সম্পদের তথ্য বিবরণীতে উল্লেখ রয়েছে, শশুর বাড়ি থেকে স্ত্রীর জন্য পেয়েছেন ৩০ ভরি স্বর্নালঙ্কার, এছাড়া তিনি তার ব্যবহার করা ৪০ লাখ টাকা মূল্যের প্রাইভেটকারের দাম দেখিয়েছেন মাত্র সাড়ে ১১ লাখ টাকা।
তথ্যবিবরনীতে গোপন করা হয়েছে নিউ ভিশন ইকো সিটিতে ক্রয় করা তার একটি প্লটের বিষয়। এছাড়া বি ব্লকের ৩৪ নম্বর প্লটটি ক্রয়ের জন্য ২০২৩ সালের ২১ ও ২৩ নভেম্বর নিউ ভিশন ইকো সিটিতে টাকা পাঠানোর দুটি মানি রিসিট সংবাদমাধ্যমের হাতে আসে। নিউ ভিশন ইকো সিটির সেলস্ ম্যানেজার তাদের ওখানে সর্বনিন্ম একটি প্লটের মূল্য ৬০ লাখ টাকা।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাব রেজিস্ট্রার জাহিদুল এবং জেলা মুন্সি মোখলেসুর রহমান কেউ ই ফেন ধরেন নি৷

আপনার মতামত লিখুন