জুলাই আন্দোলনে ৪ ও ৫ই আগষ্ট নেতৃত্বদানকারী চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাংসদ টগরের ডানহাত খ্যাত উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক ও বিতর্কিত দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হযরত আলী এখনো বহালঃ প্রশাসনের নীরবতায় প্রশ্ন স্থানীয়দের
জুলাই আন্দোলনে ৪ ও ৫ই আগষ্ট নেতৃত্বদানকারী চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাংসদ টগরের ডানহাত খ্যাত উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক ও ভোট চুরি করে পাশ করা বিতর্কিত দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হযরত আলী এখনো বহাল ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক ও দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হযরত আলী ১১ই নভেম্বর ২০২১ তারিখে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তৎকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্য আলী আজগর টগর কে ম্যানেজ করে নৌকার মনোনয়ন বাগিয়ে নেন।
কিন্তু হযরত আলীর চেয়ারম্যান হওয়ার স্বপ্ন পূরনে বাধ সাধে দুই বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা প্রফেসর শরিফুল আলম মিল্টন।
কিন্তু যেভাবেই হোক হযরত আলী কে চেয়ারম্যান হতেই হবে, যেই কথা সেই কাজ তৎকালীন এমপি টগরের নির্দেশে তার ক্যাডার বাহীনি পাটাচোরা, উজিরপুর, মোক্তারপুর, কোষাঘাটা সেন্টার দখল করে এমপি টগরের আপন ভাগিনা প্রিসাইডিং অফিসার তানভীর আহমেদ রুবেলের মাধ্যমে।
চেয়ারম্যান হযরত আলীর সেই বিতর্কিত নির্বাচন বিষয়ে জানতে চাইলে দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা প্রফেসর শরিফুল (আলম মিল্টন) বলেন, “”ভোটের ১৫ দিন আগে থেকে নির্বাচনী প্রচারণায় বাঁধা হুমকি পুলিশ দিয়ে কর্মীদের হয়রানি মিথ্যা মামলা, ছাত্রলীগ যুবলীগের ক্যাডার বাহিনী দিয়ে হামলা বাড়ি ঘরে ভাংচুর করা সহ ক্রমান্বয়ে তৎকালীন এমপি আলী আজগর টগর, তার সহোদর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলী মুনসুর (বাবু), এবং হযরত আলী নিজে আমাকে সরাসরি হুমকি প্রদান করে নির্বাচন করা থেকে বিরত থাকতে।
সেই সাথে তৎকালীন দামুড়হুদা থানার ওসি, সার্কেল এসপি আমাকে ফোন করে নির্বাচন না করতে চাপ প্রয়োগ করেন। এতকিছুর পরও হযরত আলী নিজের নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে ভোটের দিন সমস্ত ভোট সেন্টার থেকে আমার এজেন্ট দের বের করে দেওয়া হয়। এবং এমপি টগর বিভিন্ন সেন্টার দখল করে ম্যানুপুলেট করে হযরত কে বিজয়ী ঘোষণা করে। আফসোস জুলাই আন্দোলনে আমার ভাই/বোনদের এত রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন স্বাধীন বাংলাদেশে সেই হযরত বহাল তবিয়তে চেয়ারম্যান হিসেবে দাম্ভিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন “”৷
আর এভাবেই দূর্নীতি করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন দামুড়হুদা উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক হযরত আলী৷ অবশ্য ভোটের দিন হযরত আলীর শক্ত প্রতিপক্ষ জামায়াত নেতা শরীফুল আলম মিল্টন ভোট অর্জন করেন কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি৷ কারন স্থানীয় গনভবনের প্রধান আলী আজগর টগর ও তার ভাই উপজেলা চেয়ারম্যান আলি মুনসুর বাবু যে তার পকেটে।
পরবর্তীতে জুলাই আন্দোলন শুরু হলে আগষ্টের শুরু থেকে স্থানীয় এমপি টগরের নির্দেশে উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক হযরত আলীর নেতৃত্বে ছাত্রলীগ, যুবলীগের ক্যাডার রা অস্ত্র সস্ত্র সহ দামুড়হুদা ও আশপাশের এলাকায় ভয়াবহ তান্ডব চালায়।
এমনকি ৫ ই আগষ্ট সকালেও হযরত আলীর আয়োজনে ইউনিয়ন পরিষদে ভুড়িভোজের আয়োজন করা হয়। কিন্তু বিধিবাম আয়োজনের কিছুক্ষন পর শুনতে পান যে স্বৈরাচারী হাসিনা পলায়ন করেছে। সাথে সাথে হযরত চেয়ারম্যান সহ তার সাথে থাকা ক্যাডার রা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। এরপর কিছুদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকে হযরত চেয়ারম্যান ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান হযরত আলী রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার নির্দেশদাতা ও অর্থের যোগানদাতা হিসেবে অভিযুক্ত। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন নাশকতা কর্মকাণ্ডও সংঘটিত হয়েছে বলে কয়েকজন ভুক্তভোগী দাবি করেছেন।
পদ হারানোর ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বেশ কিছু নেতাকর্মী অভিযোগ করে বলেন যেই হযরত চেয়ারম্যান ৫ই আগষ্ট দুপুর পর্যন্ত আমাদের উপর নির্যাতন চালালো সেই হযরত কে আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে কিছু বিএনপির শীর্ষ নেতারা শেল্টার দেয়। কোন দুঃখে যে এই বিএনপি দলটার জন্য জেল, জুলুম, হুলিয়া ত্যাগ শিকার করেছিলাম ৷
সাথে আরো যোগ করে বলেন আমাদের এই হৃদয়ের কান্না আমাদের নেতা জনাব তারেক রহমান পর্যন্ত পৌছানো দরকার উনি নিশ্চয় এই ধরনের সীদ্ধান্ত মেনে নিবেন না৷
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হযরত চেয়ারম্যান বলেন, এসমস্ত অভিযোগ ভূয়া। এবং আমাদের প্রতিনিধি কে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট স্টাইলে জিজ্ঞেস করেন আপনি কে? কত বড় সাংবাদিক পরিচয় দেন৷
এদিকে প্রশাসনের নীরবতা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা প্রশ্ন তুলেছেন
একাধিক মামলা ও প্রশাসনিক অনিয়ম থাকা সত্ত্বেও কেন এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেও হচ্ছে না?

আপনার মতামত লিখুন