খুঁজুন
শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ৩০ কার্তিক, ১৪৩২

রাজশাহীতে বেড়েছে ছিনতাই-ডাকাতি-হত্যা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:৪০ অপরাহ্ণ
রাজশাহীতে বেড়েছে ছিনতাই-ডাকাতি-হত্যা
37

রাজশাহীতে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ঘটছে ছিনতাই, ডাকাতি কিংবা খুনের ঘটনা। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সাধারণ মানুষ। তানোর থেকে মোহনপুর পর্যন্ত একের পর এক ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পুরো জেলায়।

সর্বশেষ শনিবার রাতে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় যাত্রীবেশি ছিনতাইকারীদের হাতে নিহত হয়েছেন এক অটোরিকসা চালক। নিহতের নাম ফজলুর রহমান (৩৫)। তিনি তানোর উপজেলার কলমা ইউনিয়নের অমৃতপুর গ্রামের ইব্রাহিম হোসেনের ছেলে। পরিবার নিয়ে রাজশাহী নগরীর আসাম কলোনীতে বসবাস করতেন তিনি।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানায়, শনিবার সন্ধ্যার দিকে ফজলুর রহমান রাজশাহী নগরী থেকে যাত্রী নিয়ে মোহনপুরের কেশরহাটের উদ্দেশ্যে রওনা হন। কেশরহাটের শিয়ালকোলা এলাকায় পৌঁছালে যাত্রীবেশি ছিনতাইকারীরা অটোরিকসাটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। বাধা দিলে তারা ফজলুর রহমানের গলায় ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।

গুরুতর আহত অবস্থায় ফজলুর রহমান নিজেই অটোরিকসা চালিয়ে কেশরহাট বাজারে পৌঁছান। সেখানেই তিনি জ্ঞান হারান। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মোহনপুর থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, “আহত অবস্থায় ফজলুর রহমান নিজেই জানান, যাত্রীবেশি ছিনতাইকারীরা অটোরিকসাটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। বাধা দিলে তাকে গলায় ছুরিকাঘাত করা হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে—অটোরিকসা ছিনতাই করতেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।”

এর আগে, গত ১৫ অক্টোবর রাতে তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে বিকাশ এজেন্ট নাসির উদ্দীনের ওপর হামলা চালায় মুখোশধারী ছিনতাইকারীরা। তারা তার কাছ থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত নাসির বর্তমানে চিকিৎসাধীন।

নাসিরের স্ত্রী রাবেয়া খাতুন বলেন, “ঘটনার পর থেকে আমার স্বামী মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। ঠিকভাবে কথা বলতে পারেন না। সংসার এখন প্রায় অনাহারে।”

এ ঘটনার পর, ২৫ অক্টোবর রাতে একই উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামে ব্যবসায়ী ফটিক হাসানের বাড়িতে তিনজন ডাকাত প্রবেশ করে। তারা পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে নগদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, মোবাইল ফোন ও মোটরসাইকেলসহ মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

তানোর ও মোহনপুর ছাড়াও রাজশাহীর অন্যান্য উপজেলায় ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাতের বেলা পুলিশের টহল কম থাকায় অপরাধীরা সুযোগ নিচ্ছে। ফলে সন্ধ্যার পর রাস্তায় বের হতে ভয় পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত জেলায় ছিনতাই ও ডাকাতির ১৪টি মামলা হয়েছে। এসব ঘটনায় ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে, রাজশাহী মহানগর এলাকায় একই সময়ে ২১টি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর পুলিশ (আরএমপি)।

জেলা পুলিশের মুখপাত্র রফিকুল আলম বলেন, “সাম্প্রতিক বেশ কিছু ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করা হয়েছে। টহল কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে নগর ও গ্রামীণ এলাকায় রাতের নিরাপত্তা জোরদার করা, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং স্থানীয় কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা আরও কার্যকর করতে হবে।

রাজশাহীর সচেতন নাগরিকরা আশা করছেন, দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপের মাধ্যমে ছিনতাই ও ডাকাতির দৌরাত্ম্য কমে আসবে এবং রাজশাহী আবারও ‘নিরাপদ নগরী’ হিসেবে পরিচিতি ফিরে পাবে।

রাবিতে ৪০ বছর পর ছাত্রশিবিরের আয়োজনে নবীন বরণ অনুষ্ঠিত

রাবি প্রতিনিধি,
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ৩:১৯ অপরাহ্ণ
   
রাবিতে ৪০ বছর পর ছাত্রশিবিরের আয়োজনে নবীন বরণ অনুষ্ঠিত

চার দশকেরও বেশি সময় পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে নবীনবরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রশিবির। শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ৯টায় কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেয় সংগঠনটি।

সংগঠনটির ক্যাম্পাসে সর্বশেষ নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৮২ সালে। সেদিন শাখা ছাত্রমৈত্রী, জাসদ, ছাত্রলীগের বাধা ও পরবর্তী সংঘর্ষে ছাত্রশিবিরের চার কর্মী নিহত হন। এরপর নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে শিবির তাদের নবীনবরণ আয়োজন ক্যাম্পাসের বাইরে আয়োজন করে আসছিল।

নবীন বরণে এসে অনুভূতি প্রকাশ করে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম ফাহিম বলেন, এরকম নবীনবরণ আমরা আর কোনো সংগঠনের কাছ থেকে পাইনি। আমাদের বলা হতো শিবির নারী বিদ্বেষী, শিবির রগ কাটে। কিন্তু বাস্তবতা হলো—আমরা তাদের যত কাছাকাছি গেছি, তত তাদের সম্পর্কে জেনেছি এবং তাদের মতাদর্শ বুঝতে পেরেছি। আমরা চাই আজকের এই ক্যারিয়ার গাইডলাইনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক এবং শিক্ষার্থীদের সকল সমস্যায় তারা যেন সবসময় তৎপর থাকেন।

এসময় রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও রাকসুর ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ১৯৮২ সালের ১১ মার্চ ছাত্রশিবির রাবি শাখা নবীনবরণ আয়োজন করতে চেয়েছিল। কিন্তু আপনারা অনেকেই জানেন সেদিন কী হয়েছিল। সেই ঘটনা আমাদের এখনো আবেগতাড়িত করে। সেই নবীনবরণ অনুষ্ঠানকে অন্যান্য মতাদর্শের ভাইয়েরা বুমেরাং হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন। নবীনবরণ আয়োজনের পর আমাদের চার ভাই আর ঘরে ফিরে যেতে পারেনি। তাদের আঘাতে আমাদের চারজন ভাই শহীদ হয়েছিলেন। তারা হলেন সাব্বির ভাই, হামিদ ভাই, আইয়ুব ভাই এবং জব্বার ভাই। তারা ইসলামি ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে সারা বাংলাদেশের প্রথম শহীদ হিসেবে আজও বিবেচিত। এ ঘটনার পর থেকেই প্রতি বছর ১১ মার্চ ছাত্রশিবির ‘শহীদ দিবস’ হিসেবে পালন করে। এটি ছিল রাবি ছাত্রশিবিরের প্রতি জুলুমের ইতিহাস।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দীন বলেন, অতীতে আমার ছাত্ররা ৮-১০ হাজার টাকা দিয়ে হলে উঠতে হতো। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটি কোটি টাকার সিট বাণিজ্য হতো৷ আমরা হলগুলোতে মেধার ভিত্তিতে সিট বন্টন চালু করেছি৷৷ ফলে সিটবাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে। অতীতে তুচ্ছ কারণে আমাদের ছাত্রদের জীবন দিতে হয়েছে৷ এই ক্যাম্পাসে পদ্মা সেতুর জন্য টাকা উঠানো হয়েছিল। সেই টাকা ভাগাভাগি নিয়ে মানুষ মেরে ফেলেছে৷

এদিন নবীনবরণের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের নানারকম উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়৷ পরে শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গাইডলাইন ও দিকনির্দেশনামূলক পরামর্শ দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দীন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাকসু ও চাকসু ভিপি সাদিক কায়েম ও ইব্রাহিম হোসেন রনি। প্রধাম আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।

এছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাবি শিবিরের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সমাজসেবা সম্পাদক আব্দুল মোহাইমিন, কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও হল প্রভোস্ট, শাখা শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ প্রায় সাড়ে তিন হাজার নবীন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

ঝিনাইদহে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে প্রবা‌সী নিহত

জেলা প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ৩:০৩ অপরাহ্ণ
   
ঝিনাইদহে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে প্রবা‌সী নিহত

ঝিনাইদহে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মাহাবুবুর রহমান (৩৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। শনিবার সকাল সা‌ড়ে নয়টার দিকে সদর উপজেলার পদ্মাকর ইউনিয়নের কালা লক্ষীপুর গ্রামে এই সংঘ‌র্ষের ঘটনা ঘটে।

নিহত মাহাবুবুর রহমান কালা লক্ষীপুর গ্রামের সাব্দার হোসেন বিশ্বাসের ছেলে ও কম্বোডিয়া প্রবাসী।

ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে পদ্মাকর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ন বিশ্বাস ও ওয়ার্ড বিএনপির কর্মী জিয়ারুল ইসলাম গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে সকাল সা‌ড়ে নয়টার দি‌কে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় হুমায়ন বিশ্বাস গ্রু‌পের লোকজন দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রবাসী মাহাবুবুর রহমানকে কুপিয়ে মারাত্বক আহত করে। প‌রে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শ‌নিবার দুপুর ১টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মাহাবুবুর রহমান‌কে মৃত ঘোষনা করেন। ঘটনার পর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

অপরদিকে ঝিনাইদহ সদর উপ‌জেলার ফুরসন্ধি ইউনিয়নে বিএনপির ফিরোজ ও হামিদ গ্রুপের সংঘর্ষে ৭জন আহত হয়েছেন। তাদেরকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ২:৫৯ অপরাহ্ণ
   
গ্রেপ্তার আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম

কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম গ্রেপ্তার হয়েছেন । স্ত্রী রিয়ামনির দায়ের করা মামলায় শনিবার দুপুরে তাকে গ্রেপ্তার করেছে হাতিরঝিল থানা পুলিশ।

এর আগে বুধবার হিরো আলমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামানের আদালত। সেই প্রেক্ষিতেই আজ তাকে আটক করে পুলিশ।রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় হত্যাচেষ্টা, মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে স্ত্রী রিয়া মনি মামলাটি করেন। এ মামলায় হিরো আলমের সঙ্গে আহসান হাবিব সেলিম নামের একজনকে আসামি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

You cannot copy content of this page