খুঁজুন
শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ৩০ কার্তিক, ১৪৩২

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে মনোনয়ন দ্বন্দ্বে সংঘর্ষঃ বিএনপির পাঁচ নেতা বহিষ্কার

ময়মনসিংহ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:৪৫ পূর্বাহ্ণ
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে মনোনয়ন দ্বন্দ্বে সংঘর্ষঃ বিএনপির পাঁচ নেতা বহিষ্কার
44

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে দলীয় অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের জেরে বিএনপির পাঁচ নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

রোববার রাতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বহিষ্কৃতদের মধ্যে রয়েছেন, গৌরীপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরন, যুগ্ম আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম খোকন, সদস্য মাসুদ পারভেজ কার্জন, গৌরীপুর পৌর বিএনপির সদস্যসচিব সুজিত কুমার দাস এবং যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান পলাশ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে সহকর্মীদের ওপর হামলা, সংঘর্ষ সৃষ্টি, ভাঙচুর ও রক্তপাত ঘটানোর কারণে তাদের বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো।

এর আগে শনিবার বিকেল থেকে গৌরীপুরে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এম. ইকবাল হোসেইন এবং মনোনয়নবঞ্চিত আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরন–এর সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পৌর শহরের পাটবাজার এলাকায় শুরু হওয়া সংঘর্ষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন সড়কে। দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুর চলে টানা এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে।

স্থানীয়রা জানান, বিকেলে উভয়পক্ষ পৃথক সভার আয়োজন করেছিল। নিজেদের সমর্থন প্রদর্শনের জন্য দু’দলই মিছিল নিয়ে বের হলে মুখোমুখি অবস্থানের সময় সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হন, তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে সংঘর্ষের পরদিন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেইনের সমাবেশে অংশ নিয়ে তানজিন আহমেদ আবিদ (৩০) নামে এক ছাত্রদলকর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

তবে স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, টানটান উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির কারণে ঘটনাস্থলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, যা অনেকে শারীরিকভাবে সহ্য করতে পারেননি।

দলীয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি বিএনপির উচ্চপর্যায় থেকে মাঠ পর্যায়ে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে গৌরীপুরে সংঘর্ষের পর দ্রুত তদন্ত করে কেন্দ্রীয় কমিটি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়।

এক জ্যেষ্ঠ বিএনপি নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দল এখন আন্দোলন ও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন অবস্থায় অভ্যন্তরীণ বিভাজন বা সহিংসতা সহ্য করা হবে না। গৌরীপুরের ঘটনায় এটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।

গৌরীপুরে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখনো থমথমে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসন যেকোনো অস্থিতিশীলতা ঠেকাতে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সংঘর্ষে জড়িতদের শনাক্ত করতে ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং শান্তি–শৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দলীয় মনোনয়নকে ঘিরে তৃণমূল পর্যায়ে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা বিএনপির ভেতর বিভক্তি সৃষ্টি করছে।

সাবেক নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তা আবদুস সালাম বলেন, মনোনয়ন বণ্টন সবসময়ই একটি সংবেদনশীল বিষয়। সুষ্ঠু যোগাযোগ ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি না থাকলে এটি সহজেই সংঘর্ষে রূপ নেয়।

গৌরীপুরে বিএনপির অভ্যন্তরীণ এই সংঘর্ষ শুধু স্থানীয় রাজনীতিতেই নয়, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও নতুন বার্তা দিয়েছে।

দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় কেন্দ্রীয় কমিটির দ্রুত সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে অন্য ইউনিটগুলোর জন্যও দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়াতে পারে।

রাবিতে ৪০ বছর পর ছাত্রশিবিরের আয়োজনে নবীন বরণ অনুষ্ঠিত

রাবি প্রতিনিধি,
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ৩:১৯ অপরাহ্ণ
   
রাবিতে ৪০ বছর পর ছাত্রশিবিরের আয়োজনে নবীন বরণ অনুষ্ঠিত

চার দশকেরও বেশি সময় পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে নবীনবরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রশিবির। শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ৯টায় কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেয় সংগঠনটি।

সংগঠনটির ক্যাম্পাসে সর্বশেষ নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৮২ সালে। সেদিন শাখা ছাত্রমৈত্রী, জাসদ, ছাত্রলীগের বাধা ও পরবর্তী সংঘর্ষে ছাত্রশিবিরের চার কর্মী নিহত হন। এরপর নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে শিবির তাদের নবীনবরণ আয়োজন ক্যাম্পাসের বাইরে আয়োজন করে আসছিল।

নবীন বরণে এসে অনুভূতি প্রকাশ করে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম ফাহিম বলেন, এরকম নবীনবরণ আমরা আর কোনো সংগঠনের কাছ থেকে পাইনি। আমাদের বলা হতো শিবির নারী বিদ্বেষী, শিবির রগ কাটে। কিন্তু বাস্তবতা হলো—আমরা তাদের যত কাছাকাছি গেছি, তত তাদের সম্পর্কে জেনেছি এবং তাদের মতাদর্শ বুঝতে পেরেছি। আমরা চাই আজকের এই ক্যারিয়ার গাইডলাইনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক এবং শিক্ষার্থীদের সকল সমস্যায় তারা যেন সবসময় তৎপর থাকেন।

এসময় রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও রাকসুর ভিপি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ১৯৮২ সালের ১১ মার্চ ছাত্রশিবির রাবি শাখা নবীনবরণ আয়োজন করতে চেয়েছিল। কিন্তু আপনারা অনেকেই জানেন সেদিন কী হয়েছিল। সেই ঘটনা আমাদের এখনো আবেগতাড়িত করে। সেই নবীনবরণ অনুষ্ঠানকে অন্যান্য মতাদর্শের ভাইয়েরা বুমেরাং হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন। নবীনবরণ আয়োজনের পর আমাদের চার ভাই আর ঘরে ফিরে যেতে পারেনি। তাদের আঘাতে আমাদের চারজন ভাই শহীদ হয়েছিলেন। তারা হলেন সাব্বির ভাই, হামিদ ভাই, আইয়ুব ভাই এবং জব্বার ভাই। তারা ইসলামি ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে সারা বাংলাদেশের প্রথম শহীদ হিসেবে আজও বিবেচিত। এ ঘটনার পর থেকেই প্রতি বছর ১১ মার্চ ছাত্রশিবির ‘শহীদ দিবস’ হিসেবে পালন করে। এটি ছিল রাবি ছাত্রশিবিরের প্রতি জুলুমের ইতিহাস।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দীন বলেন, অতীতে আমার ছাত্ররা ৮-১০ হাজার টাকা দিয়ে হলে উঠতে হতো। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটি কোটি টাকার সিট বাণিজ্য হতো৷ আমরা হলগুলোতে মেধার ভিত্তিতে সিট বন্টন চালু করেছি৷৷ ফলে সিটবাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে। অতীতে তুচ্ছ কারণে আমাদের ছাত্রদের জীবন দিতে হয়েছে৷ এই ক্যাম্পাসে পদ্মা সেতুর জন্য টাকা উঠানো হয়েছিল। সেই টাকা ভাগাভাগি নিয়ে মানুষ মেরে ফেলেছে৷

এদিন নবীনবরণের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের নানারকম উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়৷ পরে শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গাইডলাইন ও দিকনির্দেশনামূলক পরামর্শ দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মাঈন উদ্দীন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাকসু ও চাকসু ভিপি সাদিক কায়েম ও ইব্রাহিম হোসেন রনি। প্রধাম আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।

এছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাবি শিবিরের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সমাজসেবা সম্পাদক আব্দুল মোহাইমিন, কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও হল প্রভোস্ট, শাখা শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ প্রায় সাড়ে তিন হাজার নবীন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

ঝিনাইদহে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে প্রবা‌সী নিহত

জেলা প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ৩:০৩ অপরাহ্ণ
   
ঝিনাইদহে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে প্রবা‌সী নিহত

ঝিনাইদহে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মাহাবুবুর রহমান (৩৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। শনিবার সকাল সা‌ড়ে নয়টার দিকে সদর উপজেলার পদ্মাকর ইউনিয়নের কালা লক্ষীপুর গ্রামে এই সংঘ‌র্ষের ঘটনা ঘটে।

নিহত মাহাবুবুর রহমান কালা লক্ষীপুর গ্রামের সাব্দার হোসেন বিশ্বাসের ছেলে ও কম্বোডিয়া প্রবাসী।

ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে পদ্মাকর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ন বিশ্বাস ও ওয়ার্ড বিএনপির কর্মী জিয়ারুল ইসলাম গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে সকাল সা‌ড়ে নয়টার দি‌কে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় হুমায়ন বিশ্বাস গ্রু‌পের লোকজন দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রবাসী মাহাবুবুর রহমানকে কুপিয়ে মারাত্বক আহত করে। প‌রে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শ‌নিবার দুপুর ১টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মাহাবুবুর রহমান‌কে মৃত ঘোষনা করেন। ঘটনার পর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

অপরদিকে ঝিনাইদহ সদর উপ‌জেলার ফুরসন্ধি ইউনিয়নে বিএনপির ফিরোজ ও হামিদ গ্রুপের সংঘর্ষে ৭জন আহত হয়েছেন। তাদেরকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ২:৫৯ অপরাহ্ণ
   
গ্রেপ্তার আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম

কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম গ্রেপ্তার হয়েছেন । স্ত্রী রিয়ামনির দায়ের করা মামলায় শনিবার দুপুরে তাকে গ্রেপ্তার করেছে হাতিরঝিল থানা পুলিশ।

এর আগে বুধবার হিরো আলমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামানের আদালত। সেই প্রেক্ষিতেই আজ তাকে আটক করে পুলিশ।রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় হত্যাচেষ্টা, মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে স্ত্রী রিয়া মনি মামলাটি করেন। এ মামলায় হিরো আলমের সঙ্গে আহসান হাবিব সেলিম নামের একজনকে আসামি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

You cannot copy content of this page