অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়া ও গণভোট ইস্যু নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা কিছু ‘উপরতলার শিক্ষিত মানুষ’ দেশের জনগণের ওপর গণভোট ও সনদের মতো বিষয় চাপিয়ে দিতে চাইছেন।
রোববার দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “কয়েকটা দল বলছে নির্বাচনের আগে গণভোট দিতে হবে, কিন্তু আমরা বলছি নির্বাচনের দিনই গণভোট হওয়া উচিত। গণভোট, সনদ এসব সাধারণ মানুষ বোঝে না এসব বোঝে ওপরতলার কিছু লোক, যারা আমেরিকা থেকে এসে আমাদের ঘাড়ে এসব চাপাচ্ছেন। তবু আমরা সংস্কারের বিষয়ে ইতিবাচক যেটা মানি সেটা বাস্তবায়িত হবে, যেটা মানি না সেটা সংসদে আলোচনা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “দেশে যত সংকট, তা সৃষ্টি করেছে একটি নির্দিষ্ট মহল। সাধারণ মানুষ এসব নাটক বোঝে না, তারা শুধু ভোট দিতে চায়। গত ১৫ বছরে আমরা ভোট দিতে পারিনি। ২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জন করেছিলাম, ২০১৮ সালে ভোট হয়েছে আগের রাতে। এবার সবাই ভোট দিতে চায়।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। নিজের দলের নেতা-কর্মীদের অসহায় রেখে পালিয়ে যাওয়া প্রমাণ করে, তাঁর জনগণের প্রতি কোনো দরদ নেই। আমরা এই দেশের মানুষ মরব এই দেশের মাটিতেই, পালিয়ে যাব না।”
কৃষকের দুরবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, “ধান, আলু, পেঁয়াজ সবকিছুরই দাম পড়ে গেছে। কৃষক লাভবান হতে পারছে না। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কৃষক যেন তাঁর ফসলের ন্যায্য মূল্য পান, সেই ব্যবস্থা করা হবে। বর্তমান সরকার মানুষের কষ্ট বোঝে না, কারণ তারা জনগণের ভোটে আসেনি।”
নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। এটাই আমার শেষ নির্বাচন হতে পারে। আমি ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ, কখনো আপনাদের ছেড়ে যাইনি। শেষবারের মতো অনুরোধ করছি, ধানের শীষে ভোট দিন, আমাকে আবার আপনাদের জন্য কাজ করার সুযোগ দিন।”
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমীন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর থানা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলামসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশের সময়: রবিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৫ । ৮:১০ অপরাহ্ণ